বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। আমাদের সকলের প্রিয় ফল কাঁঠাল। বাংলাদেশের তথা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফল কাঁঠাল। আমরা আজ বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।
কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। উপকারিতা যেমন আছে , অপকারীতাও আছে কি?
কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতাঃ
গ্রীষ্মের অন্যতম আকর্ষণীয় ফল হলো কাঁঠাল। এটি স্বাদ এবং গন্ধের জন্য অনেকের কাছেই প্রিয়। শুধু কাঁঠালই নয়, কাঁঠালের বিচিও খাওয়া হয়। এটিও উপকারী। সুস্বাদু ও সুমিষ্ট এই ফল নানাভাবে আমাদের উপকার করে থাকে। এক কাপ কাঁঠালে মেলে ১৫৭ ক্যালোরি, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ,ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার ও ম্যাংগানিজেরও উৎস কাঁঠাল। তবে কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা খুব একটা জানি না। রসালো এই ফলে কী উপকারিতা লুকিয়ে আছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সঠিক সময়ে ভোটার হতে না পারলে করনীয় বা বয়স বেশি হলে কিভাবে ভোটার হতে হয় জানতে এখানে ক্লিক করুন
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে কাঁঠালে। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
- ফাইবারের ভালো একটি উৎস কাঁঠাল। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়।
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে কাঁঠালে। তাই নিয়মিত কাঁঠাল খেলে ত্বক ভালো থাকে ও ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়।
- কাঁঠালে থাকা এক ধরনের উপকারী উপাদান আলসারের সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
- বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- কাঠালে রয়েছে প্রচুর আয়রন। এই খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কাঁঠাল।
- কাঁঠালে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে।
- অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কাঁঠাল খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। কারণ কাঁঠালে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির্যাদিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
- বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে সবজি গুন। তাইতো এটি রান্নায় বিভিন্ন সবজি তৈরির রেসিপিতে ব্যবহার করা হয়।
- প্রতিদিন একজন গর্ভবতী মহিলাকে ২০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল খেলে তার ও গর্ভস্থ শিশুর সকল ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়।
- দুগ্ধদানকারী মায়েরা কাঁঠাল খেলে তার বুকের দুধের পরিমান বাড়ে।
এছারাও ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই
কাঁঠাল বেশ মিষ্টি স্বাদের হয়। অনেকের ধারণা মিষ্টি স্বাদের এই ফল খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ভিন্ন কথা। কাঁঠাল খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। তবে অবশ্যই পরিমিত খেতে হবে। কাঁঠাল শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে। তাই ডায়াবেটিস ভয় এড়িয়ে কাঁঠাল খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
২৯ হাজার ফ্রিল্যান্সার বানাতে তিনশত কোটি টাকার প্রকল্প বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
বর্তমানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে কাঁঠাল। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। কাঁঠালে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। তাই কাঁঠাল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে দ্রুত। এটি ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
পাইলস ও ক্যান্সার দূরে রাখে
পাইলসের কষ্ট ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। আপনাকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে কাঁঠাল। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে দূর হয় কোষ্ঠকাঠিন্য। ফলে পাইলস বাড়তে পারে না।
লোহিত রক্তকণিকা বাড়ায়
লোহিত রক্তকণিকার অভাবে দেখা দিতে পারে রক্তস্বল্পতা। এই রোগের হাত ধরে দেখা দিতে পারে আরও অনেক রোগ। সুমিষ্ট ফল কাঁঠালে থাকে আয়রন। এই উপাদান রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। তাই যাদের রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য নিয়মিত কাঁঠাল খাওয়া উপকারী
কাঁঠালের অপকারীতাঃ
কাঁঠালের বিভিন্ন দিক বিচার বিবেচনা করলে দেখা যায় কাঁঠালের তেমন কোন অপকারীতা নেই। তার পরেও আকেবারে সম্পুর্ণ উপকারী নয়। যেমন
- পরিমাণে কম খাওয়াঃ বেশি পরিমানে কাঁঠাল খেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে শরীর ঘামে।
- পরাগ এলার্জিঃ আপনার যদি ল্যাটেক্স বা বার্চ পরাগ থেকে অ্যালার্জি থাকে তবে কাঁঠাল খাওয়া এড়িয়ে চলুন। কাঁঠালের সাথে এই অ্যালার্জিগুলির ক্রস-প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগঃ কাঁঠালের উচ্চ পটাসিয়াম উপাদান দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বা তীব্র কিডনি ব্যর্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। একটি অত্যধিক পটাসিয়াম খাদ্য এই ধরনের ব্যক্তিদের হাইপারক্যালেমিয়া হতে পারে। রক্তে পটাসিয়াম জমা হওয়াকে হাইপারক্যালেমিয়া বলা হয়। এটি দুর্বলতা, পক্ষাঘাত এবং হার্ট ফেইলিওর হতে পারে।
- গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারীঃ গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের সতর্কতার সাথে কাঁঠাল খাওয়া উচিত।
প্রিয় পাঠক, কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত কোন পয়েন্ট উঠে না আসলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এছারা প্রতিনিয়ত সিক্ষামুলক পোস্ট পেতে আমাদের সাথাই থাকুন। যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে। ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন