প্রিয় পাঠক, আমাদের মাঝে অনেকেই জানিনা জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগে | জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম । আবার এটাও জানি না যে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগে । চলুন আজ আমরা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগে | জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম ২০২৩
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগে
প্রথমে আমরা জেনে নিব জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগে। জন্ম নিবন্ধনে বিভিন্ন তথ্য সংশোধন করতে যেসব কাগজ লাগে তা হলঃ
১। নাম, জন্ম তারিখ ও পিতা-মাতার নামঃ নাম, জন্ম তারিখ ও পিতা-মাতার নাম সংশোধন করতে জাতীয় পরিচয় পত্র,
শিক্ষাগত যোগ্যতার সন্ পাসপোর্টের কপি, পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র, টিকা কার্ড/ হাসপাতালের সনদ ইত্যাদি।
২।স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনঃ কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র, স্থায়ী ঠিকানার হালনাগাদ কর পরিশোধের রসিদ।
৩। বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনঃ বর্তমা ঠিকানার প্রমান হিসেবে বিদ্যুৎ/ ইউটিলিটি বিলের কপি ইত্যাদি।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম ২০২৩| birth certificate correction
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। নিছে এগুলো ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হল
প্রথম ধাপঃ প্রথমে https://bdris.gov.bd/br/correction এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এরপরে মেন্যু থেকে “জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন” অপশনে ক্লিক করতে হবে।নিছে একটি নমুনা দেওয়া হল
দ্বিতীয় ধাপঃ দ্বিতীয় ধাপে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন” অপশনে ক্লিক করলে নিচের দিকে আমরা ২টি বক্স দেখতে পারব। বক্স ২টির একটিতে জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং অন্যটিতে জন্ম তারিখ লিখে অনুসন্ধান অপশনটিতে ক্লিল করব। এর পর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম সম্বলিত একটি বক্স আসবে।সেখানে আমরা নির্বাচন অপশনটিতে ক্লিক করব।
তৃতীয় ধাপঃ এই ধাপে আমরা সংশোধনের মুল পর্বে চলে আসব। এখানে আমরা যা যা তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তা সিলেক্ট করবো এবং সঠিকটি লিখব। লিখার পর আমরা পাসের সংশোধনের কারণ হিসেবে একটি কারণ সিলেক্ট করে দিব।এখানে একটি বিষয় বলে দেই সেটি হচ্ছে অনেক সময় আমরা এটি সিলেক্ট করতে ভুলে যাই।যদি আমরা অপশন সিলেক্ট করতে ভুলে যাই তাতে কোন সমস্যা হবে না । তথ্য সংশোধন হবে । নিচের ছবিটির দিকে লক্ষ্য করি-
চতুর্থ ধাপঃ এবারে ঠিকানার তথ্য পূরণের পালা। আমাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য অনুযায়ী জন্মস্থান, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার জেলা-উপজেলা সিলেক্ট করতে হবে। যেগুল সিলেক্ট করা যাবে না সেগুলো লিখে পূরণ করতে হবে। এর পর ডকুমেন্ট স্ক্যাণের পালা। আমারা যেসব তথ্য সংশোধন করেছি সেগুলো যেসব তথ্যের উপর ভিত্তি করে সেগুলো স্ক্যান করে আপলোড দিতে হবে। এর পর আমাদের একটি বিষয় সিলেক্ট করতে হবে তা হলো আবেদন কারি ব্যাক্তির সহিত সম্পর্ক । এখানে আমরা কোন কিছু না দেখে ‘নিজ’ অপশনটি সিলেক্ট করে দিব।
এর পর পুর্বে যে নিয়মটি ছিল তা হল ফি আদায় অপশন সিলেক্ট করে সাবমিট করে দিতে হতো। কিন্তু বর্তমানে নাম্বার ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু হওায় অতিরিক্ত ২টি বক্স আসে। সেখানে ১টিতে মোবাইল নম্বর লিখতে হবে এবং ওটিপি পাঠান অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। ফলে অই নম্বরে একটি ওটিপি কোড যাবে। এর পর ঐ কোডটি ২য় বক্সে বসিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনের সর্বশেষ এ ধাপে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন পত্র প্রিন্ট করার পালা।আবেদন পত্র প্রিন্ট করার অপশন পাব।সেখান থেকে আমরা আবেদন পত্র প্রিন্ট করব । সেই আবেদন পত্র ও আবেদনের ডকুমেন্ট সমুহ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা/ সিটি কর্পোরেশন অফিসে জমা দিব। এর পর ২-৩ দিনের মধ্যে আমরা সংশোধিত কাগজ পাব।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?
আমরা অনেকেই জানি না জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কত টাকা লাগে বা জন্ম নিবন্ধন সংশোধন ফি কত। বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন তথা পূর্ণ মুদ্রণের জন্য নির্ধারিত ফি আছে। জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে সাধারণত ২০০-৩০০ টাকা লাগে।জন্ম তারিখ ব্যতীত শুধুমাত্র নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি ও অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য সরকারি ফি ৫০ টাকা এবং জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা। এছাড়াও অল্প কিছু বাড়তি টাকা খরচ হতে পারে।
জন্ম নিবন্ধনের বয়স সংশোধন
অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চায় জন্ম নিবন্ধন এর বয়স সংশোধন করা জায় কি না। জন্ম নিবন্ধনের বয়স সংশোধন করবো কিভাবে? এর উত্তর হলো হ্যা। জন্ম নিবন্ধন কার্ডে বয়স সংশোধন করা যায়। তবে তা খুবই ঝামেলা যুক্ত। সাধারণত ১ বছর পর্যন্ত সংশোধন করা যাবে । এ বিষয়ে ১ বছর পর্যন্ত বয়স সংশোধন করার ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট উর্ধোতন কর্মকর্তার রয়েছে। ১ বছরের বেশি হলে আবেদনটি সরাসরি রেজিস্টার জেনারেলের কার্যালয়ে চলে যায়। সেক্ষেত্রে বেসিরভাগ সময় আবেদনটি পেন্ডিং থাকে এবং অনেক সময় আবেদন বাতিল হয়ে যায়।
কিছু জিজ্ঞাসা ও উত্তরঃ
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে?
জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন করতে সাধারণত ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতে পারে। তবে অনেক সময় এটি ৫-৭ দিন সময় নিতে পারে
জন্ম নিবন্ধন কতবার সংশোধন করা যায়?
জন্ম নিবন্ধন মোট চার বার সংশোধন করা যায়। চার বার সংশোধন করা হয়ে গেলে আর সংশোধন করা যাবে না।
পাসপোর্ট দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা যাবে?
হ্যাঁ, সংশোধিত তথ্যের স্বপক্ষে প্রমাণপত্র হিসেবে পাসপোর্ট দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করা যাবে। এবং এটি সংশোধিত তথ্যের স্বপক্ষে প্রমাণপত্র হিসেবে একটি গুরুত্তপুর্ণ দলীল।
প্রিয় পাঠক, আশাকরি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝাতে পেরেছি এবং আপনারাও বুঝতে পেরেছেন। তার পরেও কোন পয়েন্ট বুঝতে বা ভুল তথ্য মনে হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আমরা তা পরবর্তীতে সংযোজন করব।
নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করব যেভাবে, বা নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র বা ডকুমেন্টস নিয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন
এছারা বড়দের জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে | জন্ম নিবন্ধন করতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন